নাইম আইটি https://www.nayemit.com/2021/12/facebook-marketing.html

ফেসবুক মার্কেটিং কি? কিভাবে করবেন ফেসবুক মার্কেটিং?

সময়ের ব্যবধানে এনালগ মার্কেটিং ডিজিটাল মার্কেটিংয়ে রূপ নিয়েছে যার একটি পরিবর্তিত রূপ হলো ফেসবুক মার্কেটিং। আগে এক সময় টিভি চ্যানেল, পত্রিকা, রেডিও, লিফলেট, ব্যানার, পোস্টার এগুলো ছিল বিজ্ঞানের প্রধান মাধ্যমে। কিন্তু বর্তমানে যেকোনো ধরণের বিজ্ঞাপনের মূল মাধ্যমে হিসেবে জায়গা করে নিয়েছে ফেসবুক। তাই আজকে আমরা Facebook Marketing নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবো। 
ফেসবুক মার্কেটিং

ফেসবুক মার্কেটিং কি?

ফেসবুক মার্কেটিং শব্দটা ব্যাখ্যা করার আগে মার্কেটিং শব্দের ব্যাখ্যা আমরা জেনে নিবো। মার্কেটিং হলো কোন পণ্য বিক্রি করার জন্য যে উপায় অবলম্বন করে ক্রেতাদের আকৃষ্ট করা হয়। আর এই আকৃষ্ট করার কাজে মাধ্যম হিসেবে ফেসবুক ব্যবহার করা হলে তাকে ফেসবুক মার্কেটিং বলে। তবে এক্ষেত্রে একটি সুবিধা হল ফেসবুকে আপনি পেইড মার্কেটিং এর পাশাপাশি ফ্রী মার্কেটিংও করতে পারবেন। 

ফেসবুক মার্কেটিং কেন করবেন?

বর্তমানে বাংলাদেশের শতকরা 25 শতাংশ মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে থাকেন। অর্থাৎ শুধু বাংলাদেশেই প্রায় 4 কোটি মানুষ ফেসবুক ব্যবহার করে থাকে। শুধু বাংলাদেশেই 1 কোটি মানুষ নিয়মিত ফেসবুকে স্ক্রলিং করে থাকে। তাছাড়া যাদের ছোট ব্যবসা রয়েছে তাদের পক্ষে টিভি বা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া সহজ নয়। কারণ সেখানে বিজ্ঞাপন দিতে যেমন অনেক টাকার প্রয়োজন তেমনি আপনি কাস্টমার পাবেন কিনা সেটিও একটি বড় বিষয়। 

আরও পড়তে পারেনঃ 
অথচ ফেসবুকে বিজ্ঞাপন দিন কতজনের কাছে আপনার বিজ্ঞাপনটি পৌঁছেছে, কতজন আপনাকে পণ্য কেনার জন্য ম্যাসেজ দিয়েছে কিংবা কতজন আপনার বিজ্ঞাপনের পোস্টে লাইক কমেন্ট করেছে সেটি উপর ভিত্তি করে টাকা কাটবে। ফলে বুঝতে পারছেন আপনি কাস্টমার না পেলে ফেসবুক আপনার থেকে বিজ্ঞাপন বাবদ টাকা কাটতে পারবে না। বলে রাখা ভালো ফেসবুকের এলগরিদম আপনার বিজ্ঞাপন কোন কাস্টমারের কাছে পৌঁছাতে হবে সেটি খুব ভালো জানে। আশাকরি ফেসবুকে কেন বিজ্ঞাপন দিবেন বুঝতে পেরেছি। 

ফেসবুক মার্কেটিং করার নিয়ম

Facebook Marketing এর নিয়ম সম্পর্কে আমরা ইতোমধ্যে জেনেছি। এবার আপনাকে ঠিক করে নিতে হবে, আপনি কি কারণে ফেসবুক মার্কেটিং করতে চাইছেন? ফেসবুক মার্কেটিং নিয়ে আলোচনা করার পূর্বে একটি বিষয়ে আপনাদের কাছে ক্লিয়ার করার প্রয়োজন রয়েছে। সেই বিষয়টি হচ্ছে, আপনি যে ধরনের পণ্য বিক্রি করছেন, সেই পণ্যের কাস্টমার ফেসবুকে আছে কি না? অথবা একই পণ্য বিক্রি করে এমন পেজ বা গ্রুপ এর সংখ্যা কতটি?

আপনার উত্তরটি হ্যাঁ হয়ে থাকলে আপনার জন্য ফেসবুক মার্কেটিং এর আবশ্যিকতা আছে। আপনি হয়তো আমার কথাটি ভালোভাবে বুঝতে পারেননি। আমি একটি উদাহরণের মাধ্যমে বিষয়টি আরো স্পষ্ট করার চেষ্টা করছি।

ধরে নিন, আপনার একটি থ্রি পিসের শপ আছে। এখন আপনাকে পূর্বে জেনে নিতে হবে যে, থ্রি পিস কেনার মত কাস্টমার ফেসবুকে আছে কি না? এখন আপনি সহজে বলবেন, ফেসবুক যেহেতু তরুণ-তরুণী ও যুবকরা বেশি ব্যবহার করে থাকে সেহেতু থ্রি-পিস কেনার মত কাস্টোমার অবশ্যই ফেসবুকে আছে।

ঠিক একইভাবে আপনার যে কোম্পানি আছে সেই কোম্পানির প্রোডাক্ট বিক্রি করার মতো ক্রেতা ফেসবুক ব্যবহার করছে কি না, এটি আপনাকে ফেসবুক মার্কেটিং করার আগে জেনে নিতে হবে। কারণ যে পণ্যের কাস্টমার ফেসবুকে নেই, সেই পণ্যটি এর ফেসবুক মার্কেটিং করে আপনার কোন লাভ হবে না। বরং ফেসবুক মার্কেটিং করে আপনার কষ্টের টাকা অযথা নষ্ট হবে।

এখন আপনার উত্তর যদি হ্যাঁ হয় এবং ফেসবুকে আপনার পণ্য বা সেবা ক্রয় করার মত ক্রেতা থেকে থাকে, তাহলে আমাদের নিয়মগুলো অনুসরণ করে আপনি ফেসবুক মার্কেটিং করতে পারেন।

পেইড ফেসবুক মার্কেটিং

ফেসবুক পেইড মার্কেটিং বলতে মূলত ফেসবুকে পোস্ট বুস্ট করাকে বুঝানো হয়। অর্থাৎ এখানে আপনার পোস্ট বা প্রোডাক্ট সেল করার জন্য আপনাকে টাকা খরচ করে পোস্ট বুস্ট করাতে হবে। কিন্তু এক্ষেত্রে আপনার পোস্ট কতজনের কাছে যাবে বা কতজন বিজ্ঞাপনের Call to acion বাটনের মাধ্যমে আপনার সাথে যোগাযোগ করবে সেটি অনেকগুলো বিষয়ের উপর নির্ভর করে থাকে। তবে আপনার পোস্ট বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছানোর জন্য আপনাকে ফেসবুক বিজনেস ম্যানেজার এর মাধ্যমে পোস্ট বুস্ট করতে হবে। এটি করার জন্য আপনার বিজনেস ম্যানেজার একাউন্ট থাকতে হবে। তবে ফেসবুক বিজনেস ম্যানেজার একাউন্ট ভেরিফাই করা মোটামুটি কষ্টসাধ্য একটি কাজ।
 
ফেসবুক মার্কেটিং এর মাধ্যমে আপনি ওয়েবসাইট ট্রাফিক নিতে পারবেন। সাধারণত যত ডলারের বুস্ট করা হয় ওয়েবসাইট ট্রাফিক নিলো গুগল এডসেন্স থেকে তার কয়েক গুণ টাকা আয় করা যায়। ফেসবুক বুস্ট এর মাধ্যমে আপনি গুগল অ্যাডসেন্সের ইনকাম বৃদ্ধি করতে পারবেন। 

তাছাড়া ফেসবুক পেইজ মার্কেটিং এর বেশ কিছু সুবিধা রয়েছে। আপনি যদি আপনার পেইজের মাধ্যমে শাড়ি বিক্রি করেন। শাড়ি বিক্রির কোন পোস্ট বুস্ট করেন সে ক্ষেত্রে যারা এই সকল পেইজে লাইক দেয় বা এই জাতীয় পেজ থেকে কেনাকাটা করে ফেসবুক তাদের কাছে আপনার বিজ্ঞাপনটি শো করবে। বুঝতেই পারছেন এর মাধ্যমে আপনি টার্গেটেড কাস্টমারের কাছে পৌঁছাতে পারবেন। 

ফ্রি ফেসবুক মার্কেটিং

প্রথমত আপনার কোম্পানি, প্রতিষ্ঠান ও দোকানের নামে একটি ফেসবুক বিজনেস পেজ তৈরি করতে হবে। ফেসবুকে পেজ তৈরি করে আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সমস্ত ইনফরমেশন খুব ভালোভাবে সেট করে নিতে হবে। এক্ষেত্রে ফেসবুক থেকে আপনাকে কোন কোন তথ্য দিতে হবে তা বলে দেওয়া হবে। 

উদাহরণস্বরূপ কখন আপনার শপ খোলা থাকে, কখন বন্ধ থাকে, কোন ধরনের পণ্য সেল করেন ইত্যাদি বিষয় উল্লেখ করে একটি ফেসবুক পেজ তৈরি করে নিবেন। তারপর ফেসবুক পেজে আপনার বিভিন্ন ধরনের পণ্য সম্পর্কে নিয়মিত পোস্ট করতে থাকবেন। পোস্ট করার সময় খেয়াল রাখবেন যাতে ছবির কোয়ালিটি খুব ভালো হয়। 

তাছাড়া বিভিন্ন সময় আপনার দোকানের পণ্যের উপর প্রদত্ত সমস্ত অফার সম্পর্কে ফেসবুকে পেজে আপডেট দিতে থাকবেন। তাহলে আপনার পেজের ফলোয়াররা আপনার অফার সম্পর্কে জেনে নিয়ে কেনাকাটার জন্য আগ্রহ দেখাবে।

শেয়ার করলে মিষ্টি পাবেন

2 জন কমেন্ট করেছেন

Please read our Comment Policy before commenting. ??

পটেনশিয়াল আইটি কী?