নাইম আইটি
https://www.nayemit.com/2022/07/bitcoin.html
বিটকয়েন কী ও কেন? বিটকয়েন উপার্জন ব্যবসা
চলুন জেনে নেয়া যাক বিটকয়েন কি ও কেন? বিটকয়েন উপার্জনের নিয়ম। বাংলাদেশে কি এটা বৈধ? কিভাবে কাজ করে বিটকয়েন?
বিটকয়েন কি ও কেন?
বিটকয়েন তৈরি করা হয় ২০০৯ সালে। সাতোশি নাকামোতো নামক এক ছদ্ম নামধারী ব্যক্তিকে বিটকয়েনের স্রষ্টা বলা হয়।বিটকয়েনের অনন্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছে যে এই মুদ্রা কাগজে ছাপা হয় না, সোনা, রূপা বা তামা দিয়েও এটি বানানো হয় না। প্রকৃতপক্ষে বিটকয়েন একটি ডিজিটাল মুদ্রা বা ক্রিপ্টোকারেন্সি যা দিয়ে শুধু অনলাইনেই বেচাকেনা করা যায়।সহজ ভাষায় বলতে গেলে, বিটকয়েন হচ্ছে ডিজিটাল মুদ্রা যা দিয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে পিয়ার-টু-পিয়ার (peer-to-peer) ট্রানজেকশন করা যায়।
বিটকয়েনের নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষ কোন রাষ্ট্র নয়, ফলশ্রুতিতে বিটকয়েনকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কোন সর্বস্বীকৃত সংস্থাও নেই। তার মানে হচ্ছে কখন, কতগুলো বিটকয়েন বানানো হবে, বাজারে বিদ্যমান বিটকয়েন কোথায় রয়েছে অথবা বিটকয়েন জালিয়াতি দেখার জন্য কেউ নেই।
বিটকয়েন থেকে আয়?
নিচে তালিকাভুক্ত করা হলো সবচেয়ে কার্যকর উপায় যা আপনাকে বিটকয়েন দিয়ে অর্থ উপার্জন করতে সাহায্য করবে। মাইনিংঃ মাইনিং 2 ধরণের হয়।
পার্সোনাল মাইনিং
এই ধরণের মাইনিং ব্যক্তিগত ভাবে বা নিজের জন্য প্রস্তূত করা হয়। নতুন বিটকয়েন পার্সোনাল মাইনিং করেই পাওয়া যায়। বিটকয়েন মাইনিং করতে হলে অত্যন্ত হাই স্পিড কম্পিউটার ও মাইনিং সফটওয়্যার এর দরকার হয়। তবে এই প্রক্রিয়ায় অনেক বিদ্যুৎ খরচ হয়। এইভাবে মাইনিং করেই বাজারে নতুন বিটকয়েন আসে।
ক্লাউড মাইনিং
ক্লাউড মাইনিং বেশিরভাগ ব্যক্তিই বেছে নেন কারণ এই মাইনিং প্রক্রিয়ায় কোনো পুনরাবৃত্ত চার্জ বা ক্রমবর্ধমান বিদ্যুৎ বিলের প্রয়োজন হয় না। চুক্তির জন্য আপনাকে শুধুমাত্র এককালীন ফি দিতে হবে। তাছাড়া এর জন্য আপনাকে কোনো সফটওয়্যার বা হার্ডওয়্যার কেনার প্রয়োজন হয় না। সুতরাং এটি ব্যক্তিগত মাইনিং এর থেকে একটি দুর্দান্ত বিকল্প হয়ে উটেছে। তবে যেটা মাথায় রাখা প্রয়োজন সেটা হলো আপনার কষ্টার্জিত অর্থ বিনিয়োগ করার আগে সর্বদা ক্লাউড মাইনিং কোম্পানির বিশ্বাস যোগ্যতা যাচাই করতে হবে।
শপিং রিওয়ার্ড বা অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং মাধ্যমে বিটকয়েন ইনকাম
শপিং রিওয়ার্ডের মাধ্যমে বিটকয়েন ইনকাম করার জন্য আপনাকে আপনার ব্রাউজারে একটি এক্সটেনশন ডাউনলোড করতে হবে। এবং বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জিনিস চেকআউট করার সময় এটি ব্যবহার করতে হবে । এর মাধ্যমে আপনারা আপনাদের কেনাকাটার উপর 30% পর্যন্ত ক্যাশব্যাক উপার্জন করতে পারবেন৷ এই ক্যাশব্যাক বিটকয়েনের মাধ্যমে করা হয়ে থাকে। যেমনঃ Lolli ওCoinCorner
বিটকয়েন ঋণ বা ধার দিয়ে বিটকয়েন ইনকাম
আপনি যদি ইতিমধ্যেই ক্রিপ্টোকারেন্সির মালিক হন অর্থাৎ আপনার কাছে কিছু বিটকয়েন থাকে, তাহলে আপনি সেই বিটকয়েন ঋণ হিসেবে দিয়ে এর থেকে সুদ পেতে পারেন। যেমনঃ ব্লকফাই , সেলসিয়াস নেটওয়ার্ক , Crypto.com এবং Nexo ইত্যাদি৷
বিটকয়েন স্টোর বা ট্রেডিং করে রেখে বিটকয়েন উপার্জন
আপনি যদি খুব বেশি পরিশ্রম না করে বিটকয়েন দিয়ে অর্থ উপার্জন করতে চান তাহলে আপনি কিছু পরিমাণ বিটকয়েন কিনে আপনার বিটকয়েনে স্টোর করে রাখুন এবং পরে যখন বিটকয়েনের দাম বৃদ্ধি পাবে তখন সেগুলো বিক্রি করে দিন।
Bitcointalk ফোরাম পোস্টিং এর মাধ্যমে
আপনি যদি ফোরামের একজন অনুসারী হন এবং এই ফোরাম থেকে বিটকয়েন উপার্জন করতে চান তাহলে আপনি বিটকয়েনটক ফোরামে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে পোস্ট করুন। প্রথমে আপনাকে এই ফোরামে নিয়মিত পোস্ট করে আপনার প্রোফাইলের র্যা ঙ্ক বৃদ্ধি করতে হবে এবং তারপর Bitcointalk-এ আপনার পোস্টগুলিতে একটি স্পনসরড সিগনেচার থাকবে। অবশেষে, আপনি ফোরামে করা প্রতিটি সিগনেচার করা পোস্টের জন্য অর্থ পাবেন।
সার্ভে করে বিনামূল্যে বিটকয়েন ইনকাম
মার্কেট রিসার্চ কোম্পানির দেওয়া বিভিন্ন জরিপে বা সার্ভেতে অংশগ্রহণ করে আপনি বিনামূল্যে বিটকয়েন উপার্জন করতে পারেন। এর মধ্যে জনপ্রিয় কিছু সার্ভে সাইট হল –
- Survey Time
- TimeBucks
- Cointiply
- Bitcoin Reward
Bitcoin anonymous
অনেকেই মনে করে বিটকয়েন ট্র্যাক করা যায় না, আসলে এটা ভুল। বিটকয়েন ব্লকচেইনের মাধ্যমে লেনদেন হয়, কেউ চাইলে সেটা চেক করে বিস্তারিত জেনে নিতে পারবে। কিন্ত লেনদেন উচ্চ সিকিউরিটি কোড দিয়ে হয়ে থাকে যার জন্যে সাধারন মানুষের জন্য এটা বের করা কঠিন। এজন্যে লাগবে উচ্চ লেভেলের পোগ্রামার।
বিটকয়েন কি স্থির?
বিটকয়েন স্থির ভাবার মূল কারণ হলো বিটকয়েনের মুদ্রাস্ফীতি নেই বললেই চলে। আবার বর্তমানে বিটকয়েন মাইনিং প্রক্রিয়া বেশ কঠিন হয়ে উঠেছে তবে ভালো মানের হার্ডওয়ার ব্যবহারে মাইনিং করা যায়। যেহেতু প্রতি 10 মিনিটে একটি করে ব্লকচেইন উৎপন্ন হচ্ছে সেহেতু বিটকয়েন স্থির এটা ভাবার কোন মানে নেই। তাছাড়া বিটকয়েনের বিভিন্ন লেনদেন ও ব্যাংকিং খাতে বিনিয়োগ হচ্ছে তাই বলা যেতেই পারে এটি একটি চলমান কারেন্সি।
বিটকয়েন মাইনিং করা বর্তমান সময়ে একার পক্ষে সম্ভব কি?
পূর্বে বিটকয়েন মাইনিং করা বেশ কম পরিশ্রমের ছিল কিন্তু সময়ের সাথে সাথে এখন নতুন নতুন সিরিজ কোড উৎপাদন করা একটু কঠিন অবশ্যই। তবে এতটাও কঠিন নয় যে উৎপাদন করা যাবে না অনেকেই মনে করে যে বিটকয়েন উৎপাদন করা সম্ভব নয় এই সময়ে তাই বিটকয়েন কিনা ভালো।কিন্ত এই ধারনা ভুল, কারণ প্রতি 10 মিনিটে একটা নতুন বিটকয়েন জেনারেট হচ্ছে সেই সাথে ব্লক চেইন এর মাধ্যমে ব্যবহার হচ্ছে।
বাস্তব জীবনে বিটকয়েনের প্রভাব
১। লেনদেনর জন্য কোন মাধ্যমের প্রয়েজন হয় না যেমন ব্যাংক, সরাসরি লেনদেন করা যায়।
২।কোন মাধ্যম না থাকায় ট্রান্জিশন খরচ নেই যেমন ব্যাংকে টাকা লেনদেন করলে আপনাকে কিছু টাকা চার্জ পরিশোধ করতে হবে।
৩।লেনদেনরকারীর পরিচয় গোপন থাক।
৪।খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে বিশ্বের যে কোন স্থানে টাকা পাঠানো যায়।
৫। মানি এক্সচেঞ্জ চার্জ, এক্সচেঞ্জ জামেলা নেই।
৬।ক্রিয়োটোগ্রফিতে বিটকয়েন সঞ্চয় করার মাধ্যমে পরবর্তিতে অধিক দামে বিক্রয় করা যায়।
বিটকয়েন এক মাত্র ডিজিটাল ক্রিপ্টোকারেন্সি কি?
না, বিটকয়েন ছাড়াও অনলাইনে আরো প্রচুর জনপ্রিয় ডিজিটাল কারেন্সি আছে। যেমনঃ ইথিরিয়াম, রিপল, লাইটকয়েন, মনেরো, এনইএম, ড্যাশ।
বিটকয়েন পয়েন্টলেস
যদিও এটা বাংলাদেশে অনুমোদিত না কিন্তু অনলাইন কেনাকাটা বা অনলাইন আন্তর্জাতিক পেমেন্ট কিংবা মানিট্রান্সফার করতে আপনাকে ব্যাংক একাউন্টে যেতে হবে বা উভয়ের ব্যাংক একাউন্ট লাগবে, অনেক ক্ষেত্রে সেম একাউন্ট লাগে। সে ক্ষেত্রে আপনাকে দেশের কারেন্সি তে রুপান্তর করতে হলে ভ্যাট যোগ করতে হবে, কিন্তু তারপরও সেগুলো করতে ৪/৫ দিন সময় লেগে যাবে কিন্তু বিটকয়েন দ্বারা খুব সহজে নিরাপদে লেনদেন পেমেন্ট কেনাকাটা করতে পারবেন। শুধুমাত্র দুজনের দুটি বিটকয়েন ওয়ালেট থাকলেই হবে সুতরাং বর্তমানে ডিজিটাল সময়ে বিটকয়েন অবশ্যই একটি আশীর্বাদ।
0 জন কমেন্ট করেছেন
Please read our Comment Policy before commenting.